**শীতের সকাল**
শীতকাল এসেছে। চারপাশে যেন সবকিছু ঘুমাতে বসেছে। গাছপালা, পথঘাট, আকাশ—সবকিছুই যেন কুয়াশার চাদরে ঢেকে আছে। এই সময়টার জন্যই তো সকলেই অপেক্ষা করে। বিশেষ করে শিশুদের জন্য শীতকাল হলো এক চমৎকার সময়। তাদের চাহনিতেই ফুটে ওঠে আনন্দের হাসি।
শীতের সকালে সূর্যের প্রথম আলো ছড়াতে শুরু করেছে। গ্রামের পেছনে ছোট্ট একটি বাড়িতে বসবাস করে মিঠু ও তার দাদা। দাদা বয়সে প্রবীণ, কিন্তু মনে প্রাণে একজন তরুণ। শীতের সকাল তাদের জন্য একটি বিশেষ দিনের মতোই। দাদা ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠেই সবকিছু প্রস্তুত করতে শুরু করেন। উষ্ণতার জন্য আগুন পোহানো, পিঠে পুলির জন্য আটা মেখে নেওয়া—এসব কাজ তিনি দক্ষ হাতে করেন।
মিঠু মনের মধ্যে অনেক স্বপ্ন নিয়ে আজ কিছুটা শীতল পরিবেশে ঘুম থেকে উঠেছে। সে জানে, আজ দাদার সঙ্গে তারা পিঠে বানাবে এবং তারপর তারা গ্রামের মেলা দেখতে যাবে। মেলা হলো শীতকালের এক বিশেষ আয়োজন, যেখানে শিশুরা আনন্দে খেলে, বড়রা পিঠে-পুলির স্বাদ নেয় এবং সবশেষে অবশেষে সন্ধ্যায় উৎসব উদযাপন করে।
“মিঠু!” দাদার ডাক শুনে সে দ্রুত তুলে নিয়েছে। “আজ পিঠে বানাবো আমরা। তুমি আমার সাথে এসো।”
“হ্যাঁ, দাদা!” বলে সে দাদাকে অনুসরণ করতে শুরু করে। দাদা আগুন পোহালেন এবং মিঠু আটা মেখে দিতে শুরু করলো। তারা দুজন মিলে পিঠে তৈরি করতে শুরু করেন। হতাশার কিছু নেই, সারাদিন তারা আনন্দে কাটাতে প্রস্তুত।
পিঠে বানানোর পর, তারা সাবধানীভাবে মেলার দিকে রওনা দেয়। পথে পথে শিশুরা খেলাধুলা করছে, কিছু ছেলে মেয়ে কুয়াশা নিয়ে খেলছে, আর কিছু বাচ্চা গাছের নিচে শীতল বাতাসে উষ্ণতার অনুভূতি নিতে ভ্রমণ শুরু করেছে।
মেলার মাঠে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে মিঠুর চোখে পড়ে অনেক কিছু। বড় বড় রঙ্গিন প্যান্ডেল, বিভিন্ন ধরনের খাবার লাইনে দাঁড়িয়ে আছে, আর মেলায় সেজে ওঠা মানুষজন। জোড়ালো হাসি আর আনন্দে ভরা পরিবেশে মিঠু যেন হারিয়ে যায়।
“দাদা, আমি এই গভীর রঙের মালা কিনবো!” মিঠু খুশিতে চিৎকার করে উঠে।
“ঠিক আছে, তবে একটা মাত্র মালা।” দাদা হাসতে থাকেন এবং মিঠুকে একটি মালা কিনে দেন। মিঠু মালাটি তার গলায় পরে ফ্যালফ্যাল করে হাসতে থাকে।
মেলা ঘুরে বেড়ানোতে সময় চলে যায়। মিঠু এবং দাদা বিভিন্ন রকমের খেলাগুলো দেখতে থাকে, যেমন পিঠে খেলনা, লটারি এবং নানান ধরনের গেমস। কিছু জায়গায় তারা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে, যদিও মিঠুর বয়সে কিছুটা অগত্যা।
“দাদা, এই খেলায় তো আমি হারতে পারি,” মিঠু কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলে।
“এতে হবে না। তুমি চেষ্টা করো, আশায় থাকো। খেলার মধ্যে আনন্দটাই প্রধান,” দাদা উত্তর দেন।
মেলার মধ্যে তারা খাবারের চাদরও বেঁধে নেয়। পিঠে বানানোর পরকারণে দাদার সঙ্গে বের হয়ে বড় বড় পিঠার পদের স্বাদ নেওয়া গেল, আর মিঠুর মুখে লোভনীয় খাবার সহযোগে রকমারি স্ন্যাক্স উপভোগ করে। মিঠুর আনন্দ যেন চরমান্তে পৌঁছে যায়।
দিন শেষে, মিঠু এবং দাদা বাড়িতে ফেরার পথ ধরেছে। সন্ধ্যার অন্ধকার আসতে শুরু করছে, এবং শীতল বাতাস গায়ে লাগতে লাগতে ধীরে ধীরে মৌতাত শুরু করেছে। মিঠু দুটি গরম পিঠে হাতে নিয়ে দাদার পাশে হালকা দোলায় দোলতে থাকে।
“দাদা, এই গতকালকের পিঠের স্বাদ আজকের থেকে ভালো ছিল,” মিঠু মজার ছলে বলেন।
“কিন্তু আজকের পিঠের সঙ্গে তোমার হাসি তো অন্যরকম!” দাদা প্রেমময়ভাবে প্রতিউত্তর দেন।
তাদের বাড়িতে পৌঁছামাত্রই দাদা আগুনের