**গল্প: বোনের বন্ধন**
নদীর তীরে বাঁশের একটি ছোট কুঁড়ে, যেখানে একসময় আমার বাবা-মা বসবাস করতেন। এখন সেখানে আমি এবং আমার বোন সোমা নিজেদের মতো করে জীবন কাটাচ্ছি। সোমা আমার থেকে দুই বছর ছোট, কিন্তু তার বয়সের তুলনায় সে অনেক বেশি বুদ্ধিমান ও সাহসী। আমাদের আনেক ছোটবেলা থেকেই বাবা-মা আমাদের স্বাধীনতা দিতে পছন্দ করতেন। তারা মনে করতেন, প্রকৃতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকার মধ্যে রয়েছে জীবনের আসল সৌন্দর্য।
একদিন, দুপুরে যখন সূর্য আকাশের মাঝে ছিল, আমরা নদীর ধ shore নদীর ধারে বসেছিলাম। সোমা suddenly বলল, “ভাই, কি মনে হয়, আমরা যদি জঙ্গলে যাই, সেখানে একটা অ্যাডভেঞ্চার শুরু করি!” আমি একটু ভেবে দেখলাম। মনে হলো, এই ছোটো শহরের ভেতর থেকে বেরিয়ে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য খুব ভালো হবে। তাই আমি বললাম, “চল, যাই!”
সোমার চোখে আনন্দের ঝিলিক দেখা দিল। আমরা বাড়ি থেকে কিছু খাদ্য ও জল নিয়ে জঙ্গলের উদ্দেশে বের হলাম। পথে যেতে যেতে সোমা একাধিক গল্প বলল। তার গল্প শুনতে শুনতে কখন যে আমাদের কাঁধে ঝুলে থাকা ব্যাগের ওজন অনুভব করতে পারলাম না।
জঙ্গল আমাদের জন্য নতুন এক জগতের মতো। চারপাশে নানা রকমের গাছপালা, পাখির কিচির-মিচির। সোমা আমার হাত ধরে জঙ্গলের ভেতরে এগিয়ে যেতে থাকে। আমি কখনো কখনো পিছনে ফিরে তাকাই, যেন পিছনে থেকে কোনো দুষ্টু প্রাণী আমাদের ধাওয়া করছে। সোমা তখন হাসছে। “ভাই, এত ভয়ের কি আছে? এটা আমাদের অ্যাডভেঞ্চার!”
যাওয়ার পথে আমরা পরিচিত কিছু পাখির তরঙ্গ ফেলতে দেখি। সোমা পাখির মতো উড়ে উড়ে তাদের অঙ্গভঙ্গি সত্যি কৌতূহলোদ্দীপক। আমরা চারপাশের আবহাওয়ার সত্ত্বেও প্রচুর আকর্ষণ অনুভব করছি। হঠাৎ, আমাদের সামনে একটা বড় গাছের গুঁড়ির ওপর কিছু পশুর পায়ের ছাপ দেখা গেল। সোমা বলল, “ভাই, তোমার কি মনে হয়, এই পায়ের ছাপগুলো কেমন?”
আমি চিন্তা করলাম। তারা কি বন্য প্রান্তর থেকে এসেছে? আমরা ফেলে দেয়া ছাপ অনুসরণ করতে লাগলাম। অদূরে আমাদের সামনে একটি ছোট জলज़र ঘর দেখা গেল। সোমা আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “আসুন, সেখানে যাই!”
যখন আমরা জলতলের কাছে পৌঁছলাম, তখন সেখানে একটি মিষ্টি চড়ুই পাখি বসে ছিল। সোমা তাকে দেখে আরও উচ্ছ্বল হয়ে গেল। সে বিদ্যুৎবেগে বোলল, “ভাই, দেখি পাখিটা কেমন ভয় পায়!” এবং সে ধীরে ধীরে কাছে এগিয়ে গেল। পাখিটি প্রথমে ভয় পেয়ে উড়ে গেল, কিন্তু সোমার মুখের হাসি দেখে আবার ফিরে এল।
এটি দেখে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, প্রকৃতির সঙ্গে এই বন্ধন তৈরির জন্য আবেগকে প্রকৃতির প্রতি উৎসর্গ করতে পারি। সোমা ও আমি সেই জলতলে তিন চার ঘণ্টা বসেছিলাম। অনুভব করলাম, জীবনের প্রতিটি ক্ষণ আমরা এই মুহূর্তটি ধরতে পারি।
দুপুরের খাবারের জন্য আমাদের কিছু শুকনো খাবার ছিল। বসে দেখলাম, সোমা চাইলে আরও বেশি কিছু ছবি তোলার জন্য। বছরের পর বছর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা আমাদের এই সম্পর্কের দৃঢ়তা উঠতে লাগল। সোমা যেভাবে প্রকৃতির মধ্যে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল, তা আমাকে ভীষণভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছিল।
সান্ধ্যকালে, যখন সূর্য পশ্চিমে অস্ত যাচ্ছিল, তখন আমরা আবিষ্কার করলাম যে, সময়ের সঙ্গে আমাদের মধ্যে আসলে এক অদ্ভুত সৌন্দর্যের সৃষ্টি হচ্ছে। আমি বুঝতে পারলাম, জীবনকে এইভাবে উপভোগ করা সত্যি খুব সৌন্দর্যময়। সোমা আমাকে স্পর্শ করল এবং ভারী গলায় বলল, “ভাই, আজকের দিনে আমি যা দেখলাম, আর যা অনুভব করলাম, তার জন্য আমি চিরকাল ধন্যবাদের প্রাপক হব। তুমি সবসময় আমার সঙ্গী থেকো!”
আমি মনে মনে অনুভব করলাম যে, এই মুহূর্তগুলো আমাদের মধ্যে বন্ধনের নতুন ডালপালা সৃষ্টি করছে। আমরা এভাব
No comments:
Post a Comment